সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত কসবায় ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত-৪ কসবায় এলজিইডি’র শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আগরতলায় স্রোত আয়োজিত লোকসংস্কৃতি উৎসব কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি’র উপর হামলার প্রতিবাদে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কসবায় চকচন্দ্রপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ফলাফল ঘোষণা, পুরস্কার বিতরণ ও ছবক প্রদান শ্রী অরবিন্দ কলেজের প্রথম নবীনবরণ অনুষ্ঠান আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, আকাশে থাকবে চাঁদ বিএনপি-জামাত বিদেশীদের সাথে আঁতাত করেছে-কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ১৩ দিনের জন্য ভোটের মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী
সোনিয়া গান্ধীই কংগ্রেসের সভাপতি

সোনিয়া গান্ধীই কংগ্রেসের সভাপতি

নিডস আন্তর্জাতিক ডেস্ক: উত্তেজনা শোরগোল, এবং অবশেষে নেতৃত্ব পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই ‘সন্ধি’! সোনিয়া গান্ধীর উত্তরসূরি খুঁজতে বসে সোমবার (২৪ আগষ্ট) এমনই নাটকের সাক্ষী হল কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। এমনকি, কমিটির সদস্যদের একাংশ সরাসরি সরব হলেন রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত ওয়ার্কিং কমিটির অনুরোধ মেনে অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে সোনিয়া কাজ চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছেন।

সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল বৈঠক শেষের পরে জানানো হয়, নতুন সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়ে ওয়ার্কিং কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের পেশ করা প্রস্তাব সর্বসম্মত ভাবে গ্রহণ করে ওয়ার্কিং কমিটি স্থির করেছে, আগামী ছ’মাসের মধ্যে এআইসিসি-র পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন ডেকে নতুন সভাপতি নির্বাচন করা হবে। কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সোনিয়া তাঁর সমাপ্তি ভাষণে নেতৃত্ব পরিবর্তন চেয়ে ২৩ জন কংগ্রেস নেতার চিঠি পাঠানোর প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘আমি মর্মাহত হয়েছি। কিন্তু ওঁরা আমার সহকর্মী। আসুন আমরা এক সঙ্গে কাজ করি।’’

নেতৃত্ব পরিবর্তন চেয়ে ২৩ জন নেতার চিঠি ঘিরে দলের অন্দরে প্রবল টানাপড়েনের মধ্যেই আজ সোমবার (২৪ আগষ্ট) বেলা ১১টা থেকে শুরু হয় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। গোড়াতেই রাহুল গান্ধীর মন্তব্য ঘিরে বৈঠক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সনিয়া দলের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী পদ থেকে অব্যাহতি চাওয়ার পরে আজকের বৈঠকে তাঁর উত্তরসূরি মনোনয়নের বিষয়টিই আজকের বৈঠকের মূল আলোচ্য ছিল। দলের নেতৃত্ব পরিবর্তন চেয়ে ২৩ জন নেতা চিঠি লেখার পরেই সোনিয়া দলের শীর্ষ পদে থাকতে অনীহার কথা জানিয়ে ‘পূর্ণ সময়ের সভাপতি’ মনোনয়নের সুপারিশ করেছিলেন।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, আজ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের সূচনাতেও অন্তর্বর্তী সভানেত্রীর পদ থেকে তিনি ‘নিষ্কৃতি’ চান। কিন্তু মনমোহন জানিয়ে দেন, সোনিয়ার নেতৃত্বের প্রতি দলের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। মনমোহনকে সমর্থন করেন এ কে অ্যান্টনি। কিন্তু সোনিয়াকে লেখা রাহুল গান্ধীর একটি চিঠির প্রসঙ্গ ঘিরে দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বৈঠক। নেতৃত্ব পরিবর্তন চেয়ে সোনিয়াকে চিঠি লেখা নেতাদের প্রতি বিষোদগার করে রাহুলের অভিযোগ— এঁদের অনেকের সঙ্গেই বিজেপির গোপন আঁতাঁত আছে!

রাহুলের এই মন্তব্যের প্রতিবাদে আজ সরব হন আজাদ ও সিব্বল। সূত্রের খবর, রাহুলকে কার্যত চ্যালেঞ্জ করে আজাদ আজ বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ প্রমাণিত হলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’’ এমনকি, রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা এবং ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য়পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি! এক ধাপ এগিয়ে সিব্বল বৈঠক চলাকালীনই টুইটারে দলের অন্তর্বিরোধের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। লেখেন, ‘‘রাহুল গাঁধী বলছেন আমাদের সঙ্গে বিজেপির আঁতাঁত রয়েছে। রাজস্থান হাইকোর্টে কংগ্রেসকে রক্ষায় সাফল্য পেয়েছি। মণিপুরে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দলের লড়াইয়ে সঙ্গ দিয়েছি। গত ৩০ বছর বিজেপির সমর্থনে একটা কথাও বলিনি। তবুও বিজেপির সঙ্গে আমাদের আঁতাঁত!’’ কিছুক্ষণ পরেই অবশ্য টুইটটি তুলে নেন তিনি। আজাদও সুর নরম করেন।

এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল রাতে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘সোরিয়া গান্ধী নেতৃত্বেই হবে নতুন সভাপতি নির্বাচন পর্ব।’ তবে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বিতণ্ডার প্রসঙ্গ নিয়ে কিছু বলতে অস্বীকার করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘দলের অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বা প্রকাশ্যে কিছু বলা যায় না।’’

গত ৭ অগস্ট বিগত ইউপিএ সরকারের মন্ত্রী, সাংসদ, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মিলিয়ে ২৩ জন কংগ্রেস নেতা সনিয়াকে চিঠি লিখে দলের নেতৃত্ব ও পরিচালনা পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিব্বল, আনন্দ শর্মার মতো রাজ্যসভার সাংসদ, শশী তারুর, মণীশ তিওয়ারির মতো লোকসভার সাংসদ, বীরাপ্পা মইলি, রেণুকা চৌধুরীর মতো প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, জিতিন প্রসাদ, মিলিন্দ দেওরার, সন্দীপ দীক্ষিতের মতো তরুণ নেতা, ভূপিন্দ্র সিংহ হুডা, পৃথ্বীরাজ চহ্বাণদের, রাজিন্দর কউর ভট্টলদের মতো প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদের লেখা চিঠির দাবী ছিল, দলে ‘পূর্ণ সময়ের কার্যকরী নেতৃত্ব’ দরকার। এই দলীয় নেতৃত্বকে সব সময় দৃশ্যমান ও সক্রিয় থাকতে হবে। তাঁরাই সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে দল চালাবেন। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে নির্বাচনেরও দাবি তোলেন তাঁরা।

গতকাল রবিবার (২৩ আগষ্ট) সেই চিঠি ফাঁস হয়ে যায়। তার পরেই কংগ্রেস সূত্রে জানা যায়, সোনিয়া গান্ধীও পাল্টা জানিয়েছেন, তিনি দ্বিতীয়বার সভানেত্রীর পদ গ্রহণে আগ্রহী ছিলেন না। কংগ্রেস নেতাদের অনুরোধ-উপরোধেই গত বছর ১০ অগস্ট তিনি অন্তর্বর্তী সভানেত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন।

নতুন সভাপতি দ্রুত ঠিক করতে হবে বলে শর্তও দিয়েছিলেন। ২৩ সাংসদের চিঠির খবর প্রকাশ্যে আসতেই ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ, অশোক গহলৌত, ভূপেশ বঘেলের মতো মুখ্যমন্ত্রী, লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী এবং এম রামচন্দ্রন, সিদ্দারামাইয়া, ডি কে শিবকুমার, কুমারী শেলজার মতো নেতা-নেত্রীরা সনিয়া-রাহুলকে চিঠি লিখে জানিয়ে দেন, সনিয়ার নেতৃত্বেই তাঁদের আস্থা রয়েছে।

তবে তড়িঘড়ি ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্তকে কংগ্রেস নেতাদের একাংশ ‘দলীয় গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী’ বলে অভিযোগ করেছেন বলে আজ অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের মতে, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের গঠনতন্ত্রের ১৮(এইচ) ধারা বলছে, অন্তর্বর্তী সভাপতির মেয়াদ সর্বাধিক এক বছর হতে পারে।

সোনিয়ার ক্ষেত্রে সেই মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে। যদি সভাপতির মৃত্যু হয় অথবা তিনি ইস্তফা দেন তবে এআইসিসির প্রবীণতম সাধারণ সম্পাদককে অস্থায়ী ভাবে দায়িত্ব দিয়ে স্থায়ী সভাপতি নির্বাচন করতে হবে।

কংগ্রেসের নাটক-পর্ব সম্পর্কে বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী আজ বলেন, ‘‘নেহরু-গাঁধী পরিবারের রাজনীতিতে ইতি পড়ল। এ বার ওদের অস্তিত্ব সঙ্কট তৈরি হয়েছে। কংগ্রেস শেষ হয়ে যাবে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD